নভেম্বর মাস ১৯৭১ ৩ , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিবস ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ

নভেম্বর মাস ১৯৭১ ৩ , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিবস ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ , মুক্তিযুদ্ধ হলো ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম।

পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়।  যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে।

এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ইপিআর কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।

 

নভেম্বর মাস ১৯৭১ ৩ , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিবস ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ

 

নভেম্বর মাস ১৯৭১ ৩ , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিবস ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ

 

 

নভেম্বর মাস ১৯৭১ ৩ , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিবস ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ

 

মুজিবনগরে একটি মহল ২৮ নভেম্বর জানায়, বাংলাদেশ সমস্যাকে ভারত-পাকিস্তান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সেটিকে আন্তর্জাতিক রূপ দেওয়ার জন্য পশ্চিমা কিছু দেশ তৎপর। ভারত উপমহাদেশে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় বেলজিয়াম নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার যে প্রস্তাব তুলতে চায়, তাতে ইতালি যোগ দিয়েছে। জাপানকেও তারা টানতে চাইছে। কিন্তু জাপান চায়, বৃহৎ শক্তিরা নেপথ্যে তৎপর হয়ে বাংলাদেশ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুক।
আবার সোভিয়েত ইউনিয়ন ইঙ্গিত দিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান সমস্যার অজুহাতে বৃহৎ শক্তিদের অথবা নিরাপত্তা পরিষদকে জড়ানোর চেষ্টা করা হলে তারা বিরোধিতা করবে। তারা বারবার বলেছে, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং এর দুই পক্ষ হলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।

 

নভেম্বর মাস ১৯৭১ ৩ , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিবস ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ

 

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কেনেথ কিটিং ২৯ নভেম্বর সকালে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হাতে প্রেসিডেন্ট নিক্সনের চিঠি দেন। নিক্সন ইন্দিরা গান্ধী ও ইয়াহিয়া খানকে চিঠিতে বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিনকেও নিক্সন এক চিঠিতে দিল্লি ও ইসলামাবাদের ওপর প্রভাব বিস্তারের অনুরোধ জানিয়েছেন।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর দিল্লি সংবাদদাতার খবরে বলা হয়, মূল সমস্যা সমাধানের কোনো প্রস্তাব করা হয়নি বলে নিক্সনের যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান উপেক্ষা করা হবে বলে ধারণা করা হয়।

 

 

 

নভেম্বর মাস ১৯৭১ ৩ , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দিবস ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ৩০ নভেম্বর শান্তির নিদর্শন হিসেবে পাকিস্তানকে বাংলাদেশ থেকে সেনা ফিরিয়ে নিতে বলেন। তাঁর সাম্প্রতিক বিদেশ সফর নিয়ে সংসদে বিবৃতি দেওয়ার পর তা নিয়ে বিতর্ক শেষে ইন্দিরা প্রস্তাবটি দেন। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের জন্য ডিসেম্বর খুব কঠিন মাস। ভারত যথেষ্ট সংযম দেখিয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশীদের তাঁরা নিশ্চিহ্ন হতে দিতে পারেন না।

ইন্দিরাকে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সাম্প্রতিক চিঠি নিয়ে এদিন মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক কমিটিতে আলোচনা হয়। নিক্সনের যুক্তি খণ্ডন করে দ্রুত চিঠির জবাব পাঠানো হবে।

চিঠিতে নিক্সন অভিযোগ করেছেন, সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাসের প্রস্তাবে ভারত অনমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে। নিক্সন ভারতকে সংযত হতে এবং ভারত ও পাকিস্তানকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেন।

রাতে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম বলেন, আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনে ভারতীয় বাহিনীকে সীমান্ত পেরিয়ে পূর্ববঙ্গে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment